পটুয়াখালী থেকে এম কে রানাঃ— পটুয়াখালীর বাউফলে যৌতুক লোভী এক পাষন্ড স্বামী নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন রোজিনা বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থ গৃহবধূ রোজিনা জানায় ৪ বছর আগে বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের বাজেমহল গ্রামের আব্দুল রাজ্জাক হাওলাদারে ছেলে রুহুল আমিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কালিশুরী ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে আমার বাবার বাড়ি। বিয়ের সময় আমার বাবা জীবিত ছিলো না। বড় ভাই ইউসুফ হাওলাদার বোনের সুখের জন্য দর্জির কাজ করে স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ২ লক্ষ টাকার মালামাল দেয় বোন জামাইকে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে স্বামীর অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে রোজিনার স্বাভাবিক জীবন। মাঝে মধ্যে মারধরসহ খেতে না দেয়ার মত অমানবিক জীবন কাটাতে হতো রোজিনাকে। বিয়ের ৪/৫ মাস পর মোটর সাইকেল কেনার দাবী করেন।

বড় ভাই ইউসুফ হাওলাদার জানান রুহুল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে আমার কাছ থেকে যৌতুকের টাকা নেয়। বোনের সুখের কথা চিন্তা করে প্রথমে ৯৫ হাজার তার পরে ৩৫ এবং কয়েক মাস আগে ২০ হাজার টাকা দিয়েছি। এরপর শশুর শাশুরী ও স্বামীকে নিয়ে সুখে শান্তিতে সংসার করেন তিনি। কিছুদিন যেতে না যেতেই রুহুল আমিন বায়না ধরে তাকে ব্যবসা করার জন্য রোজিনার বাবার বাড়ি থেকে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক দেওয়ার অক্ষমতার কথা ভেবে রোজিনা দিনের পর দিন অনেকটা নিরবেই অত্যাচার নির্যাতন সয়ে যায়। রোজিনার আইরিন (৩) ও জামিলা (৪ মাস) নামের ২টি কন্যা সন্তান রয়েছে। শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন। কথায় কথায় তাকে মারধর করা হতো।

বুধবার রাতে আবার ১ লাখ টাকার জন্য রোজিনাকে চাপ দেয়। এ সময় অস্বীকার করলে নির্যাতনের খরগ নেমে আসে রোজিনার ওপর। শরীরের গোপন অঙ্গে কৌশল করে পেটানো হয়েছে যাতে কাউকে দেখাতে না পারে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে জখম করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। পরের দিন খবর পেয়ে বড় ভাই ইউসুফ স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য লিপি আক্তার এর সহায়তায় ওই বাড়ির বন্দিদশা থেকে রোজিনাকে উদ্ধার করে উপজেলা বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনায় বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর বলেন, এখনও পর্যন্ত কোন অভিযোগ দেয়া পায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।